বিগত দশকে ডিজিটাল সার্বভৌমত্বের উপর একাধিক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ডিজিটাল সার্বভৌমত্ব এইভাবে একটি উত্তপ্ত বিতর্কিত বিষয় হয়ে উঠলেও এখনও এর কোনও সর্বজনীন সংজ্ঞা নেই। সার্বভৌমত্বের ঐতিহ্যগত ধারণাগুলি কিন্তু রাষ্ট্রের মূল বৈশিষ্ট্যগুলির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত; এই অবস্থায় ডিজিটাল সার্বভৌমত্বের কোনও অভিন্ন অনুধাবনের অভাব একাধিক ব্যাখ্যাকে অনুপ্রাণিত করেছে, যা প্রায়শই এই বিতর্কিত ধারণার কর্তৃত্ববাদী বা সুরক্ষাবাদী অর্থের উপর জোর দিয়েছে।
এই প্রবন্ধটিতে ‘গুড ডিজিটাল সভরিনিটি’ বা ‘উত্তম ডিজিটাল সার্বভৌমত্ব’–এর ধারণাটিকে সামনে রেখে একটি ভিন্ন অবস্থান নেওয়া হয়েছে, যার মূল কথা হল যে কোনও সত্তা (শুধু রাষ্ট্র নয়) ডিজিটালভাবে সার্বভৌম হতে পারে যদি তারা প্রযুক্তি বুঝতে সক্ষম হয় এবং তাদের নিজস্ব সুবিধার জন্য তা ব্যবহার করতে পারে। এই পরিপ্রেক্ষিতে ডিজিটাল সার্বভৌমত্ব প্রযুক্তির কার্যকারিতা উপলব্ধি করা এবং তা থেকে ক্ষমতায়িত হওয়ার উপর নির্ভরশীল।
জনগণ, রাষ্ট্র বা অন্য কোনও সত্তা তখনই ডিজিটালভাবে সার্বভৌম হয় যখন তারা রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদের অনুচ্ছেদ ১, ইন্টারন্যাশনাল কভেন্যান্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিকাল রাইটস, এবং অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকারের আন্তর্জাতিক চুক্তির অনুসারী পূর্ণ আত্মনিয়ন্ত্রণের মৌলিক অধিকার উপভোগ করতে পারে এবং ‘তাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন অনুসরণ করতে পারে’। ডিজিটাল সার্বভৌমরা তাদের তৈরি বা ব্যবহার করা ডেটা, সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যারের উপর অধিকার ও কর্তৃত্ব প্রয়োগ করতে পারে। কিন্তু বাস্তবে ডিজিটাল বিষয়গুলিতে এ জাতীয় সক্রিয়তার অভাব রয়েছে।
একটি সুস্পষ্ট ডিজিটাল সার্বভৌমত্ব কৌশল না–থাকা সত্ত্বেও ভারত ও ব্রাজিল টপ–ডাউন বা বটম–আপ পদ্ধতি অবলম্বন করে উত্তম ডিজিটাল সার্বভৌমত্ব ইতিমধ্যেই তৈরি করেছে, এবং কীভাবে তা তৈরি করা যেতে পারে তার আকর্ষণীয় উদাহরণ হয়ে উঠেছে। রিও ডি জেনিরোর এফজিভি ল স্কুল–এর সেন্টার ফর টেকনোলজি অ্যান্ড সোসাইটির সাইবারব্রিকস প্রকল্পের অভিজ্ঞতামূলক কাজের উপর ভিত্তি করে এই প্রবন্ধের পরবর্তী বিভাগগুলিতে জি২০–র বর্তমান এবং পরবর্তী আয়োজকেরা কীভাবে রাষ্ট্রীয় ডিজিটাল পরিকাঠামো ও ডিজিটাল কমন্সের মাধ্যমে উত্তম ডিজিটাল সার্বভৌমত্ব তৈরি করছে তার কিছু উদাহরণ দেওয়া হবে।
ভারতীয় ইউনিফাইড পেমেন্ট ইন্টারফেস
যদিও স্পষ্টভাবে লেবেলযুক্ত নয়, তাহলেও বলা যায় ডিজিটাল সার্বভৌমত্ব সম্পর্কে ভারতীয় দৃষ্টিভঙ্গি ইন্ডিয়াস্ট্যাক –এর রাষ্ট্রীয় ডিজিটাল পরিকাঠামো উন্নয়নের প্রয়াসের উপর ভিত্তি করে নির্মিত হয়েছে। ডিজিটাল ইন্ডিয়া প্ল্যানে অন্তর্ভুক্ত এই সমন্বিত পদ্ধতির তিনটি মৌলিক স্তম্ভ আছে: ডিজিটাল পরিচয় ব্যবস্থা আধার, ইউনিফাইড পেমেন্ট ইন্টারফেস (ইউপিআই) নামক ইলেকট্রনিক পেমেন্ট সিস্টেম, এবং ডেটা এমপাওয়ারমেন্ট অ্যান্ড প্রোটেকশন আর্কিটেকচার (ডিইপিএ) নামক বেসরকারি ডেটা কনসেন্ট পরিচালন ব্যবস্থা।
যদিও এই স্তম্ভগুলি সমালোচনা থেকে মুক্ত নয়, তবু এ কথা স্বীকার করা গুরুত্বপূর্ণ যে সেগুলি ভারতের প্রায় ১.৫ বিলিয়ন মানুষকে ডিজিটাল পরিচয়, ডিজিটাল অর্থ প্রদান ও ডিজিটাল ব্যক্তিগত ডেটা পরিচালনা করার ক্ষমতা প্রদানের লক্ষ্যে সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী ও সফল ডিজিটাল রূপান্তর প্রচেষ্টার প্রতিনিধিত্ব করে। ।
এই প্রেক্ষাপটে পেমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট সিস্টেমস অ্যাক্ট, ২০০৭ অনুযায়ী ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কস অ্যাসোসিয়েশন দ্বারা ইউপিআই প্রতিষ্ঠিত হয়, যা একটি অলাভজনক সংস্থা ন্যাশনাল পেমেন্ট কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া দ্বারা পরিচালিত৷ ইউপিআই ২০১৬ সালে চালু করা হয়েছিল একটি উন্মুক্ত এপিআই–এর উপর ভিত্তি করে তাৎক্ষণিক অর্থপ্রদানের নেটওয়ার্ক হিসাবে। এটি যে কোনও ধরনের স্মার্টফোনের মাধ্যমে সহজেই ব্যবহারযোগ্য বলে মনে করা হয়েছিল, এবং এইভাবে সমস্ত অংশীদারকে বিদ্যমান স্বদেশী ডিজিটাল রাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর ভিত্তিতে সহজেই উদ্ভাবন করার সুযোগ দিয়ে অনলাইন অর্থপ্রদানের গণতন্ত্রীকরণ করা হয়েছিল।
ইউপিআই–এর সাফল্য বিস্ময়কর ছিল। এপ্রিল ২০২৩ পর্যন্ত এতে প্রায় নয় বিলিয়ন লেনদেন হয়েছে। স্পষ্টতই গত সাত বছরে ইন্টারনেট সংযোগের ব্যাপক বৃদ্ধির কারণেই এই সাফল্য সম্ভব হয়েছে, যাকে ২০১৬ সালে গৃহীত শক্তিশালী নেটওয়ার্ক নিরপেক্ষতা নিয়মের ইতিবাচক প্রভাব হিসাবে দেখা যেতে পারে। এটি ভারতীয়দের জন্য বৈষম্যহীন মোবাইল ইন্টারনেট প্রাপ্যতার নিশ্চয়তা দেওয়ার পাশাপাশি প্রতিযোগিতার প্রসার করেছে।
ব্রাজিলের পিক্স পেমেন্ট সিস্টেম
২০২০ সালে ব্রাজিলিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক (বিসিবি) ইউপিআই–এর অনুরূপ একটি উদ্যোগ ‘পিক্স পেমেন্ট সিস্টেম’–এর উদ্বোধন করেছে, যা ‘পিক্স’ নামে পরিচিত। ১২ আগস্ট ২০২০–র বিসিবি রেগুলেশন ১–এর মাধ্যমে এটি গ্রহণ করার পর থেকে পিক্স ব্রাজিলের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত অর্থপ্রদানের যন্ত্রে পরিণত হয়েছে, এবং ব্রাজিলের জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ তা ব্যবহার করছেন।
এর মাধ্যমে ২৪/৭ বিনা খরচে অর্থ স্থানান্তর করা যেতে পারে, এবং এইভাবে অর্থনৈতিক লেনদেনকে ব্যাপকভাবে সহজতর করা যায়। কারণ পিক্স ব্যবহার করার জন্য শুধু একটি স্মার্টফোন, একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও ইন্টারনেট সংযোগ প্রয়োজন। তবে এই বিষয়টির উপরেও জোর দেওয়াও গুরুত্বপূর্ণ যে, উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সত্ত্বেও পরে উল্লেখিত উপাদানগুলির কোনওটিই ব্রাজিলে সর্বজনীনভাবে সাশ্রয়ী নয়, যেমন বেশিরভাগ গ্লোবাল সাউথ–এর দেশেও নয়। কাজেই এটা কোনও কাকতালীয় ঘটনা নয় যে ব্রাজিলিয়ানদের ৭০ শতাংশ পিক্স ব্যবহার করেন, কারণ এটিই সেই জনসংখ্যার শতাংশ যাঁরা প্রাথমিকভাবে স্মার্টফোনের মাধ্যমে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করেন।
এই বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ যে পিক্স–এর আগে ব্রাজিলে ২৪/৭ ভিত্তিতে তাৎক্ষণিক ইলেকট্রনিক অর্থপ্রদান প্রক্রিয়ার একমাত্র উপলব্ধ বিকল্প ছিল বিদেশী ই–পেমেন্ট জায়ান্ট ভিসা ও মাস্টারকার্ডের নেটওয়ার্কগুলি ব্যবহার করা, যারা প্রতিটি লেনদেনের এবং সমস্ত ব্যবহারকারীর কেন্দ্রীভূত ডেটা সংগ্রহ করা ছাড়াও ৩ শতাংশ ফি চার্জ করে। এইগুলিই হল সেই প্রধান কারণ যার জন্য পিক্স–এর মতো রাষ্ট্রীয় ডিজিটাল পরিকাঠামোগুলির বিকাশ একটি উত্তম ডিজিটাল সার্বভৌমত্বের দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।
পিক্স–এর আগে দুটি ক্রেডিট কার্ডের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার অর্থ হল ব্রাজিলের ডিজিটাল পেমেন্ট সার্বভৌমত্ব প্রকৃতপক্ষে দুই বিদেশী খেলোয়াড়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল, যারা শুধু পেমেন্ট সিস্টেম থেকে মোটা মুনাফাই তোলে না, সেইসঙ্গে বিগ ডেটা অ্যানালিটিকস–এর বিশ্লেষণ দ্বারা চালিত তাদের বেসরকারি আদেশের মাধ্যমে ক্ষেত্রটিকে নিয়ন্ত্রণ করে।
প্রকৃতপক্ষে, এই বিষয়টির উপর জোর দেওয়া অপরিহার্য যে ইলেকট্রনিক অর্থ প্রদানের মধ্যস্থতাকারীদের শুধু অর্থনৈতিক কাজই নয়, একটি অপরিহার্য ডেটা শাসন দায়িত্বও রয়েছে। তাদের ব্যবসায়িক মডেল ও কৌশলগুলি ক্রমবর্ধমানভাবে (বেসরকারি) ডেটা প্রক্রিয়াকরণের উপর নির্ভর করে, যা তাদের সংগৃহীত ফি–র মতোই মূল্যবান।
এই পরিপ্রেক্ষিতে একটি গার্হস্থ্য রাষ্ট্রীয় ডিজিটাল পেমেন্ট পরিকাঠামোকে উদ্দীপিত করা গেলে তা তিনটি লক্ষ্য অর্জনের জন্য সহায়ক হবে: অর্থপ্রদানের সরলীকরণ ও গণতন্ত্রীকরণ, বাজার ও ডেটা কেন্দ্রীকরণ হ্রাস, এবং ব্রাজিলের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের কাছে (দুই বিদেশী খেলোয়াড়ের পরিবর্তে) জাতীয় অর্থনীতি সম্পর্কে অনন্য অন্তর্দৃষ্টি প্রদান। এইভাবে এমন একটি প্রবণতা যা গ্লোবাল সাউথকে চিহ্নিত করে, যেটিকে অনেক বিশেষজ্ঞ ‘ডেটা ঔপনিবেশিকতা’ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন, তা উল্টে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
কমিউনিটি নেটওয়র্ক: ডিজিটাল কমন্স–এর মাধ্যমে উত্তম ডিজিটাল সার্বভৌমত্ব অর্জন
একটি চূড়ান্ত কিন্তু অপরিহার্য বিবেচনা হল যে ভাল ডিজিটাল সার্বভৌমত্ব শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় কার্যকলাপের দ্বারা লালিত হয় না, বরং স্থানীয় জনসম্প্রদায়গুলিও বটম আপ পদ্ধতিতে এগুলি বিকশিত করতে পারে। এই ক্ষেত্রে একটি বলিষ্ঠ উদাহরণ হল ক্রাউড–সোর্সড কানেক্টিভিটি উদ্যোগ হিসাবে কমিউনিটি নেটওয়ার্কগুলো, যারা ভারতীয় ও ব্রাজিলীয় উভয় স্তরেই ইন্টারনেট সংযোগ প্রসারিত করতে ক্রমবর্ধমান প্রাসঙ্গিক ভূমিকা পালন করে।
কমিউনিটি নেটওয়ার্কগুলি হল ক্রাউড–সোর্সড বটম–আপ উদ্যোগ, যা ডিজিটাল কমনস হিসাবে স্থানীয় সম্প্রদায়ের দ্বারা নির্মিত ও পরিচালিত হয়। এগুলি ডিজিটাল বিভাজনগুলি কাটিয়ে ওঠার জন্য এবং ‘নেটওয়ার্ক স্বনিয়ন্ত্রণ’ অর্জনে সহায়ক হয়,[১] এবং প্রমাণ করে যে স্থানীয় জন্যসম্প্রদায়ের জন্য ইন্টারনেট সংযোগ স্থানীয় জনসম্প্রদায়গুলিও তৈরি করাতে পারে। সংযোগ সম্প্রসারণের জন্য এই বিকল্প ও পরিপূরক কৌশলগুলি হল স্বসংকল্পের সারমর্ম, যা দেখায় যে স্থানীয় সম্প্রদায়গুলি তাদের নিজস্ব ডিজিটাল পরিকাঠামো, পরিষেবা ও বিষয়বস্তু বিকাশের মাধ্যমে তাদের ডিজিটাল ভবিষ্যতের নায়ক হয়ে উঠতে পারে।
ব্রাজিলিয়ান কুইলোমোবোলা[২] মহিলা, গ্রামীণ সম্প্রদায়, এবং ভারত ও ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকার (যারা আইবিএসএ পার্টনারদের মধ্যে ভারতের পরে জি২০–র আয়োজক হবে) বস্তিবাসীরা তাঁদের নিজস্ব কমিউনিটি নেটওয়ার্ক তৈরি করে তাঁদের ডিজিটাল ভবিষ্যতের নায়ক হয়ে উঠেছেন। তাঁরা স্থানীয় জনসম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে স্থানীয় মানুষের চাহিদা পূরণ করার জন্য আক্ষরিকভাবে ইন্টারনেটের নতুন অংশগুলি কীভাবে তৈরি করা যায় তা শিখেছেন।
অন্য কথায়, পূর্বে অ–সংযুক্ত ব্যক্তিদের স্থানীয় সম্প্রদায়গুলিও ডিজিটাল সার্বভৌম হতে পারে, প্রযুক্তি বুঝতে এবং বিকাশ করতে পারে, এবং নিজেদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশকে ত্বরান্বিত করতে পারে।
উত্তম ডিজিটাল সার্বভৌমত্ব আত্ম–সংকল্পকে উৎসাহিত করার জন্য সহায়ক
ডিজিটাল সার্বভৌমত্বের এই ধারণাটি আমাদের এ কথা বিবেচনা করতে চালিত করে যে এটি পিতৃতান্ত্রিক ধারণা এবং শেষ পর্যন্ত এমন অনুমান ভুল হবে যে ডিজিটাল সার্বভৌমত্বের উৎস হতে পারে শুধুই রাষ্ট্রগুলি, যদিও তাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে৷ বরং, যে কোনও উদ্যোগের ভিত্তিতে ‘উত্তম ডিজিটাল সার্বভৌম’ হতে পারেন একজন ব্যক্তি, একটি স্থানীয় জনসম্প্রদায়, একটি কর্পোরেশন, একটি রাষ্ট্র বা এমনকি একটি অতিজাতীয় সংস্থা।
এই চেতনায়, এই লেখকের পরামর্শ হল ডিজিটাল সার্বভৌমত্বের জন্য একটি অজ্ঞেয়বাদী পন্থা অবলম্বন করে নির্দিষ্ট উদ্যোগের যোগ্যতা বিশ্লেষণ করা উচিত। ডিজিটাল সার্বভৌমত্বের প্রকৃতি নির্বিশেষে, উত্তম ডিজিটাল সার্বভৌমত্বের অভিন্ন লক্ষ্য অবশ্যই প্রযুক্তির মাধ্যমে ক্ষমতায়ন, অগ্রগতি এবং অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধি।
[১] আমি নেটওয়ার্ক স্বনিয়ন্ত্রণকে সংজ্ঞায়িত করি ‘নেটওয়ার্ক পরিকাঠামোর নকশা, উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনাকে একটি সাধারণ ভালো হিসাবে সংজ্ঞায়িত করার জন্য গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে মানুষের অবাধে যুক্ত হওয়ার অধিকার হিসাবে, যাতে সমস্ত ব্যক্তি স্বাধীনভাবে তথ্য ও উদ্ভাবন সন্ধান করতে, প্রদান করতে এবং গ্রহণ করতে পারেন।” ধারণাটি এই বিবেচনার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে যে অবাধে সংযোগ–পরিকাঠামো বিকাশের মাধ্যমে ব্যক্তি ও সম্প্রদায়গুলি তাদের স্বনিয়ন্ত্রণের মৌলিক অধিকার, অর্থাৎ সংযোগের মাধ্যমে ‘তাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন অনুসরণ করার’ মৌলিক অধিকার ভোগ করে।
[২] কুইলোম্বোস হল এমন কমিউনিটি যা ব্রাজিলের দাসত্বের সময় শোষণ থেকে রক্ষা পেতে আফ্রিকান ক্রীতদাসদের জন্য আশ্রয়স্থল হিসাবে আবির্ভূত হয়েছিল। এগুলি ষোড়শ শতকে পর্তুগিজ উপনিবেশকারীদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং ১৮৮৮ সাল পর্যন্ত এগুলির রক্ষণাবেক্ষণ করেছিল। এই কমিউনিটিগুলির বাসিন্দাদের বলা হয় কুইলোম্বোলাস। ১৯৮৮ সালের সংবিধান গৃহীত হওয়ার সাথে সাথে ব্রাজিল কুইলোম্বোলাদের তাদের জমির মালিকানা এবং তা ব্যবহার করার অধিকার প্রদান করে।