২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের প্রথম বৈঠকের পর থেকে জি২০-র জন্য স্বাস্থ্য একটি অগ্রাধিকার হিসেবে প্রতিপন্ন হয়েছে। তা ছাড়া ২০১৮ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদ ‘পিএইচসি মতাদর্শগুলি’কে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্তরের পরিষেবায় প্রসারিত করার মাধ্যমে চিকিৎসা-বহির্ভূত প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপের সঙ্গে যুক্ত প্রাথমিক স্তরের যত্নকে সশক্ত করার জন্য একটি সম্মিলিত ইউনিভার্সাল হেলথ কেয়ার (ইউএইচসি) এবং প্রাইমারি হেলথ কেয়ার (পিএইচসি) পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। এনএইচএম, এইচআইভি প্রোগ্রাম, ফার্মাসিউটিক্যাল এবং টিকাকরণ ক্ষমতা ও সামাজিক বিমা প্রকল্পের মতো উদ্যোগের পথিকৃৎ হিসাবে বর্তমানে ভারতের জি২০ সভাপতিত্ব যৌক্তিকভাবে একটি স্থিতিশীল স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচি প্রদান করে। তাই এ ক্ষেত্রে স্বভাবতই মূল অগ্রাধিকার হবে এনসিডি-র ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক সমস্যা মোকাবিলায় উদ্ভাবনী কৌশলগুলির মধ্যে সমন্বয় সাধন করা এবং বর্তমান সময়ের জন্য স্থিতিস্থাপকতা, ভবিষ্যতের জন্য সুস্বাস্থ্য এবং তারও পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের এসডিজিগুলি অর্জনে সহায়তা করা।
এই অগ্রাধিকারগুলি বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ অতিমারির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছে যা বিশ্বব্যাপী মানুষের সম্ভাব্য আয়ুষ্কাল হ্রাস করার সঙ্গে সঙ্গে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার লক্ষ্যে গৃহীত কাজের প্রায় দু’দশকের অগ্রগতিকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। এর ফলস্বরূপ, এসডিজি ৩ অর্থাৎ সুস্বাস্থ্য এবং সুস্থতা অর্জনের কাঙ্ক্ষিত পথে বিশ্বকে চালিত করার জন্য অবিলম্বে জরুরি বিবেচনা এবং পরিবর্তন প্রয়োজন।
‘সুস্বাস্থ্য মানে শুধু রোগের অনুপস্থিতি নয়…’ দীর্ঘ স্বাস্থ্যের মেয়াদ বজায় রাখার জন্য প্রতিরোধ এবং হস্তক্ষেপের কৌশলও প্রয়োজন। এর পাশাপাশি এই উদ্বেগও সামনে উঠে এসেছে যে, সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিসংখ্যানগুলি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার অবস্থার একটি ভাল চিত্র প্রদান করতে ব্যর্থ হয়েছে। সুস্থতা ও অগ্রগতি পরিমাপ করার জন্য ওইসিডি পরিকাঠামো তিনটি উপাদান নিয়ে নির্মিত এই প্রক্রিয়াটিকে সমর্থন করে: বর্তমান সময়ে সুস্থতা, সুস্থতার ফলাফলে বৈষম্য এবং ভবিষ্যতের সুস্থতার জন্য সংস্থান।
তাই এখন সময় এসেছে একত্র হওয়ার, ঝাঁপিয়ে পড়ার, সাধারণ যুক্তিবুদ্ধির প্রকৃত মানবিক শক্তি পুনরুদ্ধার করার, অপূর্ণতাগুলিকে গ্রহণ করার এবং সুউচ্চ ও প্রায়শই অবাস্তব বৈশ্বিক লক্ষ্য নির্ধারণে নম্র হওয়ার। মানুষ এবং সজীব পরিবেশের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া অপ্রত্যাশিত স্বাস্থ্য ঝুঁকি এবং প্রতিরোধযোগ্য ও পরিবর্তনযোগ্য ঝুঁকির সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়া উচিত। পৃথিবীতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার নিরিখে মানুষের কৃতকর্ম তাদের নিজস্ব ব্যবহার পরিবর্তনের চেয়ে আলাদা কোনও বিষয় নয়। অত্যধিক উচ্চাকাঙ্ক্ষী বৈশ্বিক লক্ষ্যগুলি মানুষের মনের সঙ্গে অনুরণিত হতে ব্যর্থ হয়েছে। জনসাধারণ, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম, বর্তমানে বেঁচে থাকায় বিশ্বাসী এবং বৈশ্বিক নেতাদের অবশ্যই এই ব্যবধানকে স্বীকার করতে হবে। স্থিতিস্থাপকতা গড়ে তোলার অর্থ হল বৈশ্বিক নেতৃত্বকে জনসাধারণের সম্মুখে একটি স্বচ্ছ আয়না তুলে ধরতে হবে, যাতে মানুষ নিজেদের প্রতিফলন দেখতে সমর্থ হয় এবং আয়নায় নিজের প্রতিচ্ছবিতে তুচ্ছ অথচ অর্জনযোগ্য ‘সংশোধন’-এর কাজ করতে আগ্রহী ও সমর্থ হয়।
২০২১ সালে শান্তি, যেটি মানবাধিকার, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং ইউরোপীয় সমন্বয় ও সংহতি প্রচারকারী সংস্থা প্যানইউরোপা বুলগেরিয়া ‘দি (ইন?)ভিন্সিবল প্যান্ডেমিকস’ নামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে৷ সেই প্রতিবেদনের লক্ষ্য হল সবচেয়ে বেশি দেখা যায় এমন পরিবর্তনযোগ্য স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণগুলি চিহ্নিত করা এবং ক্ষতি ও সংশ্লিষ্ট অর্থনৈতিক বোঝা হ্রাস করার জন্য মানুষকে সজাগ করে তোলার মতো সদুপদেশ দেওয়া এবং তার নেপথ্যে থাকা সহজবোধ্য বৈজ্ঞানিক ধারণা প্রদান করা। এর পাশাপাশি প্রতিবেদনটি উদ্ভাবনী, বিজ্ঞানভিত্তিক সমাধানগুলির দিকে একটি স্থানান্তরকে উত্সাহিত করে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ব্যক্তি অধিকারকে মর্যাদা দেয়।
চিত্র ১: ঝুঁকির কারণ, যা বিশ্বব্যাপী ১০ জনের মধ্যে ৭ জনের মৃত্যুর জন্য দায়ী
ক্ষতি হ্রাস একটি বাস্তবসম্মত এবং উদ্ভাবনী পদ্ধতি, যা অসংক্রামক রোগের (এনসিডি) জন্য স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণগুলি মোকাবিলায় গতি অর্জন করছে। এ ক্ষেত্রের যত্নের জন্য আরও ব্যাপক, বিজ্ঞানভিত্তিক এবং সহানুভূতিশীল পদ্ধতির প্রচার জরুরি। এনসিডি-র ক্রমবর্ধমান চাপের সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতি হ্রাসকে জনস্বাস্থ্য নীতিতে একটি কার্যকর পদ্ধতি হিসাবে বিবেচনা করার বিষয়টিও আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। অস্বাস্থ্যকর খাদ্য, তামাক ব্যবহার এবং কর্মহীন জীবন/শারীরিক নিষ্ক্রিয়তার মতো আচরণগত ঝুঁকির কারণগুলি অকালমৃত্যুর জন্য অন্যতম দায়ী। অত্যধিক মদ্যপান এবং সমস্যা সৃষ্টিকারী স্ক্রিন ব্যবহারের মতো ঝুঁকির অন্য কারণ সহ এইগুলি নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে এবং রোগ প্রতিরোধের কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে (চিত্র ১)।
অস্বাস্থ্যকর খাদ্যের সঙ্গে সংযুক্ত ঝুঁকিগুলি মোকাবিলায় ক্ষতি হ্রাস ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এর একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কৌশল হল অপেক্ষাকৃতভাবে স্বাস্থ্যকর বলে বিবেচিত স্বল্প চিনি, নুন, চর্বিসম্পন্ন অথবা তা বিহীন অপ্রক্রিয়াজাত অথবা কম প্রক্রিয়াজাত খাদ্য ব্যবহারে উৎসাহিত করে চিনি, নুন এবং চর্বিযুক্ত উপাদানের পরিমাণ কমিয়ে আনার মাধ্যমে খাবারের প্রক্রিয়াজাতকরণ হ্রাস করা। একই সঙ্গে এ কথা সুনিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ যে, কম সংখ্যক ক্ষতিকারক খাদ্য বিকল্প যেন সব ধরনের ভোক্তাদের কাছে লব্ধ ও ক্রয়যোগ্য হয়। স্বাস্থ্যকর খাদ্য পছন্দের পাশাপাশি খাদ্য ও পানীয়ের ফ্রন্ট-অফ-প্যাক নিউট্রিশন লেবেলিং (এফওপিএনএল) সুনিশ্চিত করার জন্য উচ্চ শিল্প বিনিয়োগ এবং সরকারি প্রণোদনার প্রয়োজন রয়েছে। এই কৌশলগুলি ছাড়াও নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপে উৎসাহ জোগাতে হবে এবং নির্দিষ্ট খাবারের সঙ্গে যুক্ত স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তুলতে হবে। নীতি প্রয়োগ করলে ফ্রি সুগারের মতো ক্ষতিকারক উপাদানসম্পন্ন পণ্যগুলিকে নিম্ন ঝুঁকিসম্পন্ন পণ্য থেকে পৃথক করার কাজে ভূমিকা পালন করতে পারে। সর্বোপরি খাদ্যকে তাদের পুষ্টিগত মান এবং তাতে উপস্থিত চিনি ও নুনের মাত্রার ভিত্তিতে লেবেল করা বা চিহ্নিত করা মানুষকে আরও সচেতন সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করতে পারে।
অত্যধিক মদ্যপান একটি বৈশ্বিক সমস্যা যা স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, পরিবার এবং সমাজকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ওইসিডি দেশগুলিতে ক্ষতিকারক মদ্যপানের কারণে প্রতি বছর ১ লক্ষ মানুষের মধ্যে ২৪ জনের অকালে মৃত্যু হয় (চিত্র ২)।
চিত্র ২: অকাল মৃত্যুহারে ক্ষতিকারক মদ্যপানের প্রভাব
মদ্যপানের ব্যবহার সীমিত করা এবং পানীয়গুলিতে উচ্চ ঘনত্বের ইথাইল অ্যালকোহল মাত্রা নিয়ন্ত্রণ-সহ ক্ষতি হ্রাসকারী উদ্যোগগুলি গ্রহণ করতে হবে। একই সঙ্গে ক্ষেত্রটির সম্পৃক্ততার পাশাপাশি বাণিজ্যিক এবং বিনোদনমূলক সংস্থার কর্মীদের সক্রিয়ভাবে তাঁদের ক্রেতাদের অর্ডার দেওয়া বা ক্রীত পানীয়ের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রেও সহায়তা করা উচিত। অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়গুলিতে ইথানলের মাত্রা সম্পর্কে সচেতন করার জন্য সংস্থাগুলিকে শিক্ষামূলক প্রচারাভিযান চালাতে হবে। অ্যালকোহলবিহীন বিকল্প, যেমন নন-অ্যালকোহলিক বিয়ার, ওয়াইন বা মকটেলগুলি স্বাস্থ্যকর। ক্রেতাদের অবশ্যই মদ্যপানের সময়ে লেবেল খুঁটিয়ে দেখা উচিত, স্বল্প মাত্রার অ্যালকোহলসম্পন্ন পানীয় বেছে নেওয়া উচিত, নিজস্ব গতিতে পান করা উচিত এবং তাঁদের দ্বারা গৃহীত নিয়মিত ওষুধ সম্পর্কে সচেতন থাকা উচিত। কারণ ওষুধ গ্রহণের পাশাপাশি মদ্যপানের বিরূপ স্বাস্থ্য প্রভাব রয়েছে।
বায়ুদূষণের সঙ্গে সঙ্গে ধূমপানও এমন এক প্রধান বৈশ্বিক সমস্যা যা জনস্বাস্থ্যের উল্লেখযোগ্য ঝুঁকির সৃষ্টি করে। ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে মানুষকে শিক্ষিত করা এবং জনস্বাস্থ্যমূলক প্রচার ও তথ্য সংক্রান্ত কর্মসূচির মাধ্যমে স্বাস্থ্য সাক্ষরতা বৃদ্ধি করা একটি প্রধান কৌশল হতে পারে। এর পাশাপাশি ধূমপানকারীদের বদভ্যাস ছাড়ানোর জন্য ফার্মাকোলজিক্যাল চিকিৎসা ব্যবহার করতে হবে। চিকিৎসা এবং ফার্মাকোলজিক্যাল হস্তক্ষেপ ছাড়াও, মনস্তাত্ত্বিক হস্তক্ষেপও ব্যবহার করা উচিত। অন্য পন্থাগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল সিগারেট বা অন্যান্য ধূমপান সংক্রান্ত পণ্যকে বিভিন্ন ধরনের নিকোটিন বা তামাক ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতিস্থাপন করা, যেগুলি দহন সংশ্লিষ্ট নয় এবং যেগুলিতে বিষাক্ত পদার্থ, কার্সিনোজেন এবং অন্য ক্ষতিকারক উপাদানগুলির মাত্রা খুব কম থাকে। অবশেষে ঝুঁকির মাত্রার প্রেক্ষিতে আর্থিক পরিমাপ-সহ পণ্যের পৃথগীকৃত বিপণন পদ্ধতি এবং লেবেলিং বা চিহ্নিতকরণের জন্য ঝুঁকিভিত্তিক প্রবিধান প্রয়োগ করা যেতে পারে।
সমস্যা সৃষ্টিকারী স্ক্রিন ব্যবহারের সময়ও একটি ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক উদ্বেগে পরিণত হয়েছে (চিত্র ৩)। প্রাসঙ্গিক ক্ষতি কমানোর পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ এবং পিতামাতার জন্য শিশুদের অত্যধিক স্ক্রিন টাইমের ঝুঁকি সম্পর্কে নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা এবং স্ক্রিন ব্যবহারের সময়সীমা নির্ধারণের জন্য তাদের সরঞ্জাম এবং সংস্থান সরবরাহ করা। স্কুলে ডিজিটাল দক্ষতা শিক্ষার জন্য জীবন / স্ক্রিনের ভারসাম্য বজায় রাখার অংশগুলিকেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, দলগত ঐক্য এবং নাটক, শিল্পকলা এবং দলগত আলোচনার মতো ‘বিদ্যালয়ের সনাতন কার্যকলাপ’-এর প্রচার চালাতে হবে। এগুলি আসক্তিমূলক আচরণ, উদ্বেগ এবং খাদ্য গ্রহণে বিশৃঙ্খলার পরিমাণ হ্রাস করতে পারে। বিজ্ঞপ্তি সূত্র সংক্রান্ত স্পষ্ট নীতি এবং সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাগুলি দ্বারা মূল্য-প্রদেয় ও অপ্রদেয় বিষয়বস্তুর প্রচার পদ্ধতিকেও কাজে লাগানো যেতে পারে।
বিজ্ঞানকে সর্বজনীন স্তরে আরও বোধগম্য করে তুলতে হবে। ব্যবসায়িক সংস্থাগুলিকে কম ক্ষতিকারক পণ্যে বিনিয়োগ করতে হবে। নাগরিক হিসেবে আমাদের সরকারের কাছে সমস্যা চিহ্নিতকরণ, তা সমাধানে সক্রিয় ও উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ এবং দীর্ঘমেয়াদি ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা-সহ কার্যকর নীতি প্রণয়নের জন্য আবেদন করতে হবে।
এই প্রেক্ষিতে প্রত্যেক মানুষ অবদান রাখতে পারেন এবং সুফল লাভ করতে পারেন।
‘আমরা আসলে আমাদের অবিরাম অভ্যাসের ফসল। সুতরাং উৎকর্ষ অভ্যাসেরই নামান্তর, কোনও পৃথক অবস্থা নয়।’
~ অ্যারিস্টটল
চিত্র ৩: সমস্যা সৃষ্টিকারী স্ক্রিন ব্যবহার সংক্রান্ত ঝুঁকি
এই প্রতিবেদনটি ‘জি২০-থিঙ্ক২০ টাস্ক ফোর্স ৩: লাইফ, রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড ভ্যালুজ ফর ওয়েলবিয়িং’ সিরিজের অংশ